সর্বশেষ

আজ সকালে ঢাকায় আসছেন মিশেল বাচেলেত

/ অগ্রগতি ও অঙ্গীকারের প্রশংসা চায় সরকার /

প্রকাশ :


২৪খবরবিডি: 'চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও অঙ্গীকারের প্রশংসা চায় সরকার। একই সঙ্গে সরকার মানবাধিকার ইস্যুকে রাজনৈতিকীকরণের যেকোনো চেষ্টা প্রত্যাখ্যান করছে।'জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের প্রধান ও মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাচেলেতের বাংলাদেশ সফরের প্রাক্কালে গতকাল শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
 

মিশেল বাচেলেত চার দিনের সফরে আজ রবিবার সকালে ঢাকায় আসছেন।' জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের কোনো প্রধানের এটিই প্রথম বাংলাদেশ সফর। মিশেল বাচেলেত দুই মেয়াদে চিলির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, মানবাধিকার এজেন্ডার রাজনৈতিকীকরণ কখনোই জনগণের মানবাধিকার প্রচার ও সুরক্ষায় সাহায্য করে না। তাই আন্তরিক সংলাপ ও সহযোগিতা হলো পথ। তাই জাতিসংঘের হাইকমিশনারের আসন্ন সফরকে সরকারের ওপর অযথা চাপ সৃষ্টির উপলক্ষ হিসেবে দেখিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কিছু দৃশ্যমান রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চেষ্টা বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।


-পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ জাতিসংঘের একটি দায়িত্বশীল ও প্রতিক্রিয়াশীল  সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে মানবাধিকারের প্রসার ও সুরক্ষার জন্য হাইকমিশনারের সঙ্গে একটি গঠনমূলক আলোচনার জন্য উন্মুখ। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রক্রিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান ঘনিষ্ঠ সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতা আরো বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, 'চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অগ্রগতির বিষয়ে হাইকমিশনারের বস্তুনিষ্ঠ প্রশংসা থেকে এ দেশ লাভবান হবে বলে আশা করছে।' জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তর জানায়, বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান এ সফর করছেন। সফরে হাইকমিশনার মিশেল বাচেলেত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অন্য মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধি ও অন্য অংশীদারদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়া তিনি ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে বক্তব্য দেবেন।
 

'হাইকমিশনার মিশেল বাচেলেত ঢাকার ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। হাইকমিশনার এ দেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে কক্সবাজারে যাবেন। সেখানে তিনি রোহিঙ্গা, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। চার দিনের সফর শেষে ঢাকা ছাড়ার আগে তিনি আগামী বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করবেন। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের প্রধান এমন এক সময় সফর করছেন, যখন বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে দেশে-বিদেশে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এমনকি এ সফরের প্রাক্কালে আন্তর্জাতিক কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন মিশেল বাচেলেতকে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সরব হওয়ার আহবান জানিয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তর ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ফলে গণমাধ্যম ও নাগরিকদের বাকস্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। এ ছাড়া নাগরিক সমাজের কাজের সুযোগ ও বিভিন্ন বাধা নিয়েও তাঁরা উদ্বেগ জানিয়েছেন।


-পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মানবাধিকারের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ। মিশেল বাচেলেতের এ সফর জনগণের মানবাধিকারকে সুরক্ষা ও এগিয়ে নিতে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং বাংলাদেশের জাতীয় প্রেক্ষাপট তুলে ধরার এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হবে। বাংলাদেশ তার অভ্যন্তরীণ আইনি কাঠামো ও বাস্তবায়নের উদ্যোগগুলোর বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য তুলে ধরবে।

 আজ  সকালে  ঢাকায়  আসছেন  মিশেল  বাচেলেত

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, জাতীয় প্রেক্ষাপট, বিশেষ করে মহামারি ও অন্যান্য ক্রমবর্ধমান সংকটের মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা, এবং রোহিঙ্গা সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের মতো প্রতিবন্ধকতাগুলো যথাযথভাবে বিবেচনায় নিয়ে এ দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, চুক্তি ও অন্যান্য কাঠামোর আওতায় নিয়মিত প্রতিবেদন উপস্থাপনসহ মানবাধিকারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনেক অর্জনের বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার অবগত আছেন।

'বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ গৃহহীনদের প্রায় ১০ লাখ বাড়ি দেওয়ার সামর্থ্য রাখে। এর সামাজিক নিরাপত্তা সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় এক কোটিরও বেশি পরিবার মৌলিক খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সরবরাহ পাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ মানুষের জন্য খাদ্যের অধিকার, বাসস্থানের অধিকার, উন্নয়নের অধিকার ইত্যাদি মৌলিক মানবাধিকারের প্রচার করছে।'

Share

আরো খবর


সর্বাধিক পঠিত